মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের রুপির রেকর্ড দরপতন হয়েছে। এতে করে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানির এই মুদ্রার দর দাঁড়িয়েছে ২৫৫ রুপিতে। পাকিস্তানি মুদ্রার দামে এটিই সর্বনিম্ন পতন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্থিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পেতে কার্যত মরিয়া হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। তাই শর্ত মেনে মুদ্রা বিনিময় হার বা এক্সচেঞ্জ রেট শিথিল করেছে দেশটি। আর এরপরই বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি মুদ্রার দামে ব্যাপক পতন হয় বলে স্থানীয় মিডিয়া রিপোর্ট করেছে।
এর আগে গত বুধবার পাকিস্তান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশটির মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানিগুলো ডলার থেকে রুপিতে বিনিময় হারের ওপরে সীমা তুলে নেয়। খোলা বাজারে পাকিস্তানি মুদ্রার দাম কমাতেই পরিকল্পনামাফিক এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
এরপর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি মুদ্রার দামে ২৪ রুপি পতন হয়। এতে করে প্রতি ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি মুদ্রার দাম ২৫৫.৪৩ রুপিতে দাঁড়ায়। অর্থাৎ এক মার্কিন ডলার সমান ২৫৫.৪৩ পাকিস্তানি রুপি।
সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি রুপির দাম ২৪ রুপি কমেছে এবং এদিন দুপুর ১ টায় মার্কিন ডলারের বিপরীতে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির মুদ্রা ২৫৫ রুপিতে বিক্রি হয়েছে।
আর্থিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে সম্প্রতি আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল পাকিস্তান। তবে আইএমএফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পাকিস্তান সরকার যেন মুদ্রার দামের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়। এতে করে খোলা বাজারেই ধার্য হবে পাকিস্তানি মুদ্রার মূল্য বা রেট।
শেহবাজের সরকার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। পাকিস্তান মূলত বৈশ্বিক এই আর্থিক সংস্থার কাছ থেকে ৬.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল পেতে চায় এবং নানা শর্তের বেড়াজালে বর্তমানে সেটি স্থগিত রয়েছে। গত বছর এই আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত হলেও এবারের তহবিল এখনও পায়নি পাকিস্তান।
এদিকে পাকিস্তানি মুদ্রার দামের ব্যাপক পতনের কারণে শুধু আর্থিক সংকট নয়, খাদ্যদ্রব্যেরও ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। পাকিস্তানের বেশ কিছু অংশে এক প্যাকেট আটা ৩ হাজার রুপিতে পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে।
এছাড়া সম্প্রতি ঘন ঘন ব্ল্যাকআউটও শুরু হয়েছে পাকিস্তানে। আর তাই খরচ কমাতে মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। দেশটিতে নতুন যে প্রস্তাব আনা হয়েছে তাতে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন ১৫ শতাংশ এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ১০ শতাংশ কমানোর কথা বলা হয়েছে।
এমনকি মন্ত্রিপরিষদের সদস্য সংখ্যা ৩০ জনে নামিয়ে আনার সুপারিশও করা হয়েছে। বর্তমানে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য সংখ্যা ৭৮ জন।